পাগড়ি যদি চয়েস হয় হিজাব কেন নয়? হিজাব বিতর্কে সোনম

হিজাব বিতর্কে উত্তাল গোটা দেশ, এই বিতর্ক নিয়ে এবার মুখ খুললেন সোনম কাপুর। সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবরই নিডর হয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করে থাকেন ‘নারীবাদী’ সোনম কাপুর। এবার তার ব্যতিক্রম ঘটল না। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি পোস্ট শেয়ার করেন অনিল কন্যা। সেখানে একটি ফটো কোলাজের বাঁ দিকে দেখা পাগড়ি পরা এক ব্যক্তিকে, ডান দিকে হিজাব পরা এক মহিলা। পাগড়ি পরা পুরুষের উপর বড় বড় হরফে লেখা, ‘এটা আপনার চয়েস হতে পারে’, কিন্তু হিজাব পরা মহিলার ছবির উপরে লেখা, ‘এটা (চয়েস) হতে পারে না?’

বিগত প্রায় একমাস ধরে কর্ণাটকে হিজাব বিতর্ক চলছে। কলেজে হিজাব পরে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছে কর্ণাটকের একাধিক শিক্ষাঙ্গন। হিজাব পরিহিত কিছু মুসলিম মেয়েকে উদুপির একটি সরকারি কলেজে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল গত ডিসেম্বরে। এরপর থেকে পরপর কলেজে নিষিদ্ধ হয়েছে হিজাব। চলতি সপ্তাহে সেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কলেজ চত্বরে লাঠি চার্জ পর্যন্ত করতে হয়েছে পুলিশকে।

এই আবহে বিতর্কে জল ঢালতে নির্দেশিকা জারি করে গত বুধবার থেকে তিনদিন কলেজ ও হাইস্কুল গুলিতে ছুটি ঘোষণা করেছিল কর্ণাটক সরকার। হিজাব বিতর্ক নিয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে কর্নাটক হাইকোর্ট অন্তর্বতীকালীন রায়ে পড়ুয়াদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনওরকম ধর্মীয় পোশাক পরা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। যা এই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছে।

বৃহস্পতিবার হিজাব মামলার শুনানিতে কর্নাটক হাইকোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, দ্রুত হিজাব বিতর্কের সমাধান করতে চায় হাইকোর্ট। সেইসময় পর্যন্ত শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের এরকম সব ধর্মীয় জিনিস পরার উপর জেদ ধরে থাকা উচিত নয়।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা রায় দেব। স্কুল ও কলেজ শুরু হতে দিন। কিন্তু বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ধর্মীয় পোশাক পরার ক্ষেত্রে কোনও পড়ুয়ার জেদ ধরে থাকা উচিত নয়।’ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে।

জাভেদ আখতার-সহ বহু বলিউড সেলেবই হিজাব বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন। জাভেদ আখতার বলেন, হিজাব বা বুরখা পরবার সমর্থক না হলেও মেয়েদের উপর যেভাবে চড়াও হয়েছে কিছু গুণ্ডা সেই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন তিনি। এই ইস্যুতে পরোক্ষ মন্তব্য করেছেন কঙ্গনা। তিনি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘সাহস দেখাতে চাইলে আফগানিস্তানে বোরখা না পরে নিজেকে সাহসী প্রমাণিত করুন, মুক্ত হতে শিখুন, নিজেকে জেলবন্দি করবেন না’। সঙ্গে ইরানের দুই জমানার একটি ছবির কোলাজ পোস্ট করেন কঙ্গনা। প্রথমটিতে ১৯৭৩ সালের ইরানের ছবি পোস্ট করেন তিনি, যেখানে সুইমস্যুট পরে বিন্দাস বসে থাকতে দেখা গিয়েছে মহিলাদের, পরবর্তীটা ৫০ বছর পরের ইরানের বোরখা পরিহিত মহিলাদের।