কাদাপানিতে ধানের চারা রোপণ করতে স্কুলের নির্ধারিত পোশাক পরা ৭০ জন শিক্ষার্থী খেতে নেমেছে। নতুন পাঠ্যসূচি বাস্তবায়ন করতেই হাতেকলমে শিক্ষার এই উদ্যোগ নিয়েছেন নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার খিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক।
কয়েকদিন আগে দেখা গেছে, স্কুলের নির্ধারিত পোশাক পরা শিক্ষার্থীরা একজন অভিজ্ঞ কৃষকের দিকনির্দেশনায় সেদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ৩৫ শতক জমিতে ধানের চারা রোপণ করেন। এতে ভিন্ন রকম নজির সৃষ্টি করেছে তারা। এভাবেই হাতকলমে পাঠসূচির একটি অধ্যায় শেখাচ্ছেন খিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক শাকিল আহমেদ।
সপ্তম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের প্রথম অধ্যায়ের নাম ‘ফসলের ডাক’। ফসল বোনা, পরিচর্যা, সংরক্ষণ, হরিধান ইত্যাদি বিষয়ের উল্লেখ আছে সেখানে। তাদের বাবাও কৃষক। কিন্তু কখনও মাঠে গিয়ে তাঁকে সাহায্য করেনি তারা। এখন থেকে বাবাকে কৃষিকাজে সাহায্য করবে।
জানা গেছে, পাঠ পরিকল্পনা মতো একদিন সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাসে হাজির হলেন কৃষক হারিজ উদ্দিন। এর আগেই শিক্ষার্থীদের তার বিষয়ে বলে রেখে ছিলেন শিক্ষক শাকিল আহমেদ। কৃষক হারিছকে সামনে পেয়ে শিক্ষার্থীরা কৃষি বিষয়ে নানান ধরনের প্রশ্ন করেন। অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে নিজের মতো করে শিক্ষার্থীদের কৌতূহল মেটানোর চেষ্টা করলেন কৃষক হারিছ।
শিক্ষার্থীরা এবার নিজ হাতে ফসলের মাঠে কাজ করতে পারবে কিনা প্রশ্নের জবাবে সমস্বরে ‘হ্যাঁ’ বলে তারা। শিক্ষক শাকিল প্রধান শিক্ষক এবং কৃষক হারিছের সঙ্গে এ বিষয়ে পরামর্শ করলেন। তারাও ইতিবাচক সাড়া দিলেন।
শিক্ষক শাকিল আহমেদ জানান, ছোটবেলা থেকেই একজন শিক্ষার্থী যদি জানে জমিতে ফসল বোনা, পরিচর্যা ও সংরক্ষণ কীভাবে করতে হয়, তাহলে এটা তাকে আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করবে। এই কাজে জড়িত হয়ে সে কখনও কৃষি পেশাকে ছোট করে দেখবে না। নিজের কাজ নিজে করে আনন্দও পাবে।