অবশেষে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কিনা জানা গেল

রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সমীচীন নয় বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টার কাছে জানতে চাওয়া হয় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, ‘যখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে, তখন আপনি দেখেছেন আমাদের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে প্রতিবাদ করা হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে আমি না, যদি না কোনো জঙ্গিবাদী কিংবা রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় তারা লিপ্ত থাকে।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে যদি কোনো রাজনৈতিক দল জঙ্গিবাদী কিংবা রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় জড়িত থাকে, তাহলে প্রচণ্ড সততার সঙ্গে তদন্ত করে এমন কিছু করা যেতে পারে। আমাদের সংবিধান অনুসারে সংগঠন করার স্বাধীনতা আছে, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল, বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামে তাদের অবদান ছিল। কিন্তু গেল ১৫ বছরে তারা যা করেছে, সেটা তাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে যায় না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে যায় না, বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বর্বরতম ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল আওয়ামী লীগ।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এই কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যক্তিগত দায় থাকতে পারে, নেতাদের সামষ্টিক দায় থাকতে পারে, কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সমীচীন হবে বলে আমি মনে করি না।’

একটি দলকে কখন সন্ত্রাসী সংগঠন বলা উচিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি নস্যাৎ করতে চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বৈষম্যহীন ও শোষণহীন সমাজকে ধ্বংস করার জন্য যারা পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র সংগ্রাম করে, তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন বলা উচিত। তবে মতামত প্রকাশ যতটা অবারিত রাখা যায়, ততটাই ভালো।’

আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নীতিগতভাবে নিষিদ্ধ করেনি দাবি করে তিনি বলেন, ‘ছাত্র জনতার আন্দোলনকে দমাতে কৌশল হিসাবে ব্যবহার করার জন্য আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে। তাই আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভের মিথ্যার অংশ ছাত্র জনতার এই সরকার হতে পারে না। জামায়াত আবেদন করেছে নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহারের। আইন মন্ত্রণালয় ভেটিং করেছে। এখানে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই।’