‘গরম জল’ প্রসঙ্গে নিজের বক্তব্য পরিবর্তন করে যা বলছেন অরুণা বিশ্বাস

আওয়ামী লীগ সমর্থিত শোবিজ তারকাদের একটি গ্রুপ চ্যাটের স্ক্রিনশট ফাঁস হয়েছে যা নিয়ে তোলপাড় চলছে দেশে। ‘আলো আসবেই’ নামক সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

ওই গ্রুপে তারকা আন্দোলন দমিয়ে রাখতে কাজ করছিলেন। গ্রুপে অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস ছাত্রদের ওপরে গরম জল ঢালার পরামর্শ দিয়ে রয়েছেন তোপের মুখে। এরই মধ্যে জানা গেছে, সরকার পতনের পরপরই তিনি কানাডা পাড়ি জমিয়েছেন। সেখান থেকে পুরো বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে।

ছাত্রদের ওপরে গরম পানি দেয়া প্রসঙ্গে অরুণা বলেন, ‘আমরা কিন্তু সেখানে (গ্রুপে) কোনও বাজে কথা বলিনি। আমরা কিন্তু সব সময় বলেছি ছাত্রদের সঙ্গে বসেন। কথা বলেন। আমরা তো আর নীতিনির্ধারণী কেউ না। সেখানে বলা হয়েছে হাসপাতালে আগুন। ওখানে কেউ ঢুকতে পারছে না। আমি বলেছি গরম জল দিলেই হয়। গরম জল তো কামান থেকে দেয়। জলকামান লিখি নাই আর কি। ওখানেই বোধহয় মিসটেক হয়েছে। কামানে যে গরম জল থাকে সেটার কথা বলেছি।’

অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আসলে আমরা কেউ কিন্তু ছাত্রদের বিপক্ষে ছিলাম না। আমাদের মিডিয়ার লোকজন তাদের বিপক্ষে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছে। আমরা কিন্তু সন্ত্রাসীদের কথা বলেছি। ছাত্রদের কথা না।

কানাডা থেকে দেশে ফেরার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এড়িয়ে যান অভিনেত্রী। বলেন, ‘এগুলো এখন আর না বলি। এখন কোনও কিছুই নরমাল লাগছে না। কাউকে আপন মনে হচ্ছে না। দেখছি তো অনেক সাংবাদিকের বউ মন্ত্রীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গান গাইছে। অনেক সাংবাদিক জাতীয় পুরস্কার পাইছে। তারা তো ধুমায়া লিখে গেছে। আমি আওয়ামী লীগ করছি ঠিকই, সেন্সর বোর্ডের মেম্বার ছিলাম, কিন্তু আমি তো কোনও নীতিনির্ধারকের জায়গায় ছিলাম না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর লক্ষ্যে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং সংসদ সদস্য ফেরদৌসের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামের ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়, যেখানে আওয়ামীপন্থি শিল্পী ও সাংবাদিকেরা যুক্ত ছিলেন। তবে প্রকাশিত স্ক্রিনশট শটে সক্রিয় ছিলেন অভিনেত্রী সুইটি, সোহানা সাবা, অরুণা বিশ্বাসসহ কয়েকজন।

জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী শুরু থেকেই ছাত্রদের পক্ষ ছিলেন। ওই গ্রুপে ফারুকীকে নিয়েও চলে সমালোচনা। অরুণা সমালোচনার এক পর্ক্সায়ে ফারুকীকে ‘হারামজাদা’ বলে বসেন। এমনকি বিভিন্ন ব্যক্তিকে ‘রাজাকার’ তকমা দেয়া, আবার শিল্পীদের স্ট্যাটাস-কর্মকাণ্ডে তুলে ধরে তাদের চিহ্নিত করে রাখতে বলেছেন এই অভিনেত্রী।

প্রসঙ্গত, ‘আলো আসবেই’ গ্রুপটিতে আরও ছিলেন সুবর্ণা মুস্তাফা, সোহানা সাবা, বিজরী বরকতুল্লাহ, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা, বদরুল আনাম সৌদ, শমী কায়সার, তানভীন সুইটি, রওনক হাসান, মাসুদ পথিক, আশনা হাবীব ভাবনা, শামীমা তুষ্টি, জামশেদ শামীম, উর্মিলা কর, মামুনুর রশিদ, সাজু খাদেম, হৃদি হক, আশরাফ কবীর, দীপান্বিতা মার্টিন, সাইমন সাদিক, জুয়েল মাহমুদ, জায়েদ খান, ঝুনা চৌধুরী, লিয়াকত আলী লাকি, সৈয়দ আওলাদ, নূনা আফরোজ, রোকেয়া প্রাচী, গুলজার, এসএ হক অলীক, লিমন আহমেদ প্রমুখ।