বিলুপ্তির পথে প্রকৃতির ঝাড়ুদার

দেশে শকুনের বিলুপ্তি ঠোকানো যাচ্ছে না কোনোভাবেই। দিনে দিনে কমছে প্রকৃতির ঝাড়ুদার খ্যাত শকুনের সংখ্যা। প্রাণিটি রক্ষায় দেশের একমাত্র শুকুন চিকিৎসা ও পরিচর্যা কেন্দ্র কাজ করলেও যথেষ্ট নয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় ব্রিডিং করে শকুনের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ গবেষকদের।

প্রকৃতির ঝাড়ুদার শকুন। মৃতদেহ খেয়ে হজম করে ফেলে অ্যানথ্রাক্স, যক্ষা, ক্ষুরাসহ নানা রোগের জীবাণু। কিন্তু উপকারী এই শকুন এখন নতুন প্রজন্মের কাছে এক অদেখা প্রাণি। ড্রাইক্লোফেনাক ওষুধ প্রয়োগসহ নানাবিধ কারণে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে মাত্র ২০ বছরের ব্যবধানে‌ই।

শকুন পরিচর্যা কেন্দ্রে এক পুরুষ দর্শনার্থী বলেন, মরা জীবজন্তু খাইতো। আগে শুনেছি, এখন প্রথম খাঁচায় বন্দি অবস্থায় দেখছি। এক নারী দর্শনার্থী বলেন, কোনো দিন দেখিনি। তাই বাবুকে নিয়ে এসেছি তা দেখতে।

তবে এর মধ্যেও আশার আলো দেখাচ্ছে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সিংড়া শালবনে গড়ে ওঠা দেশের একমাত্র শকুন চিকিৎসা ও পরিচর্যা কেন্দ্র। যেখানে অসুস্থ শকুন উদ্ধারের পর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয় মুক্ত আকাশে।

এক পরিচর্যাকারী বলেন, এখানে শকুন পরিচর্যা করা হয়। পরে সেগুলো অবমুক্ত করে দিই। আরেক পরিচর্যাকারী বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে শকুন সংগ্রহ করে নিয়ে আসি আমরা। পরে খাবার দিই। সুস্থ করে তুলি। সেবা ও চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিই।

এখন পর্যন্ত ১৫৬টি শকুন পরিচর্যা শেষে ছেড়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে তা পর্যাপ্ত নয় উল্লেখ করে ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে শকুনের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা জানান বিশেষজ্ঞরা। দিনাজপুর বন বিভাগের কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়া ৮টি শকুন পরিচর্যা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্স অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. উম্মে সালমা বলেন, আমরা সহায়তা করছি। তবে পর্যাপ্ত দেয়া যাচ্ছে না। কারণ, শকুনের ব্রিডিং পলিসি নেই। তবে এ নিয়ে কাজ হচ্ছে। বাংলাদেশ বন বিভাগ ও আইইউসিএন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে কেন্দ্রটি চালু হয় ২০১৪ সালে।